ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় প্রশাসনের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা:নৌকার সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বিদ্রোহীদের

এম জাহেদ চৌধুরী, চকরিয়া ::   পেকুয়ায় রবিবার অনুষ্টিতব্য উপজেলা নির্বাচনে সুষ্টু ও নিরপেক্ষ ভোট আদায়ে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে প্রশাসন। ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারের বিপুল সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তৃতীয় ধাপের পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে সবধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট প্রয়োগ করবেন ভোটাররা।
রবিবারের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আবুল কাশেম নাকি আওয়ামীলীগের দুই বিদ্রোহী এসএম গিয়াসউদ্দিন (আনারাস) ও জাহাঙ্গীর আলম (দোয়াত কলম) জিতবেন তা নিয়ে ভোটারদেও মাঝে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কেউ বলছেন নৌকার সাথে আনারসের, আবার কেউ বলছেন নৌকার সাথে দোয়াত কলমের লড়াই হবে। সেই জল্পনার বাস্দব রুপ দেখতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে রবিবার রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত।
এদিকে নির্বাচনকে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ করতে শনিবার দুপুরে পেকুয়া থানা কম্পাউন্ডে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দিকনিদের্শনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.ইকবাল হোছাইন।
তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। যারা কেন্দ্রে ঝামেলার সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে সাথে সাথে এ্যাকশনে যাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশৃংখলাকারী যেই হোকনা কেন, এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্য যদি জড়িত থাকে তাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে। তিনি ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসার জন্যও অনুরোধ জানান।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী মো.মতিউল ইসলাম বলেন, উপজেলা নির্বাচন সুষ্ট ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবেনা। আশা করি চকরিয়ার মতো একটি সুন্দর ও সুশৃংখল নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পেকুয়া থানার ওসি মো. জাকির হোসেন ভুঁইয়া, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।
পেকুয়া উপজেলা সহকারী রিটানিং ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, নিরপেক্ষ ভোট আদায় করতে ৭জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ সদস্য করে ১শত সদস্য নিয়ে ৫ প্লাটুন বিজিবি ও পুলিশের ১৬৮ সদস্য কাজ শুরু করেছেন। তাছাড়া ৪ শতাধিক আনসার সদস্য নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন। উপজেলার সবকটি কেন্দ্রেকেই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ভেবেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নির্বাচন চলাকালে প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশের দুই সদস্য ও আানসারের টিম কাজ করবে। এছাড়া ৯ সদস্য করে তিনটি পুলিশের টিম স্ট্রাইকিং ও ৬ সদস্যের ১০টি মোবাইল টিম মাঠে থাকবে।
জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৪০টি কেন্দ্রের ২৫০টি বুথে ১ লাখ ৬ হাজার ২৮৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং সাধারণ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৬জন এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন।
উল্লেখ্য, এই উপজেলায় আওয়ামীলীগ মনোনিত উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ‘নৌকা’ প্রতিক নিয়ে, আওয়ামীলীগের দুই বিদ্রোহী জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এসএম গিয়াসউদ্দিন ‘আনারস’ ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ‘দোয়াত কলম’ প্রতিক নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। তিন প্রার্থীই প্রতিক পাওয়ার পর থেকে আরাম হারাম করা প্রচার চালিয়েছেন ভোটারদের মন জয় করতে। নৌকার প্রার্থী নাকি আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী দুইজনের কোন একজন জিতবেন তা সুস্পষ্ট করে ভোটাররা বলতে পারেননি। তবে প্রার্থীসহ তাদের স্ব-স্ব সমর্থকরা নিজেরাই জিতবেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

পাঠকের মতামত: